শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
কলাপাড়া প্রতিনিধি, পটুয়াখালী।।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এ বছর বর্ষা মৌসুমে ছয়টি ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে এসেছে। সমুদ্র জেলেদের ফেলা জালে ডলফিন আটকা পড়লেই সেগুলো মেরে সাগরে ফেলে দিচ্ছে জেলেরা। এছাড়া সাগরে ফেলা জেলেদের হাজারী বড়শিতে আটকেও মারা যাচ্ছে ডলফিন। এতে সাগরে ইকো সিস্টেমের মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। হুমকিতে পড়েছে কুয়াকাটার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র। তাই সাগরে নির্বিচারে ডলফিন হত্যা বন্ধে এখনই আইন প্রনয়ন ও জেলেদের সচেতন করার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটি।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেললে লিখিত বক্তব্যে ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার লিখিত বক্তব্যে এ ডলফিন হত্যা বন্ধের দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, দেশে যখন জীববৈচিত্র রক্ষায় সরকারি- বেসরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, ঠিক তখনি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে একের পর এক ভেসে আসছে সামুদ্রিক বন্ধু প্রাণি ডলফিন। প্রতি নিয়ত সমুদ্রের এই রঙ্গরস ও নৃত্যরত ডলফিনের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। দিনে দিনে এভাবে ডলফিন মৃতের কারণে একদিকে যেমন সামুদ্রিক পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে,তেমনি আমাদের নিষ্ঠুরতার প্রমানও হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের এই বর্ষা মৌসুমে কুয়াকাটার ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে পর পর ৬টি ডলফিনের মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। গত দুই দিনে তিনটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে এসেছে। মৃত ডলফিনগুলো সাগরে ফেলা জালে আটকা পড়ায় সেগুলো মারা গেছে বলে ধারনা করছেন। সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে অসচেতনতার অভাবে এভাবে নির্বিচারে ডলফিন মারা যাচ্ছে। প্রতি বছর এভাবে অন্তত ১০ থেকে ১২টি ডলফিন শুধু সৈকতেই ভেসে আসছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে সমুদ্রের এই বন্ধু প্রানীটিকে রক্ষায় সরকারি পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সংবাদ সম্মেলনে ইকোফিস-২ প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি, ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য কে এম বাচ্চু, আবুল হোসেন রাজু ও আসাদুজ্জামান মিরাজ উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ডলফিন রক্ষায় ১৫ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়।
পটুয়াখালী জেলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ডলফিন বণ্যপ্রাণী আইন দ্বারা সংরক্ষিত। আমরা এ মাসেই কুয়াকাটায় জেলেদের সচেতন করতে প্রচারণা ক্যাম্প করবো। তা ছাড়া ডলফিন সুরক্ষার জন্য আরও কী করা যায়, তা নিয়ে কাজ চলছে।’